পুলিশকে কোন দল বা গোষ্ঠীর তল্পিবাহকের ভূমিকা পালন না করার জন্য জানালেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
বিশেষ প্রতিনিধি : বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত পুলিশ বাহিনীকে কোনো দল, গোষ্ঠী বা সম্প্রদায়ের তল্পিবাহকের ভূমিকায় অবতীর্ণ না হতে তাগিদ দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
রবিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ১০টায় রাজশাহীর সারদায় বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমিতে এক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। ৪০তম বিসিএস (পুলিশ) ক্যাডারের শিক্ষানবিশ সহকারী পুলিশ সুপারদের (এএসপি) প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন উপদেষ্টা।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘বাংলাদেশ রাষ্ট্র সকল নাগরিকের, কোনো দলের নয়, কোনো গোষ্ঠীর নয়, কোনো সম্প্রদায়ের নয়। বাংলাদেশ পুলিশ প্রজাতন্ত্রের স্বাধীন কর্মচারী, যারা সুনির্দিষ্ট আইন মেনে চলেন। প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী হিসেবে বাংলাদেশ পুলিশ রাষ্ট্রের সকল নাগরিকের সার্বিক নিরাপত্তা ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় নিরলসভাবে কাজ করবে। তারা কোনো দলের তল্পিবাহক হয়ে, কোনো দলের এজেন্ডা বাস্তবায়ন কিংবা তাদের অন্যায্য ও অন্যায় নির্দেশনা পালন করতে গিয়ে অপেশাদার আচরণ ও বেআইনি কাজ করবে না-আজকের এই সমাপনী অনুষ্ঠানে আপনারা এই শপথে বলীয়ান হবেন, এই আশাবাদ ব্যক্ত করছি।’
পুলিশ সদস্যদের উদ্দেশে জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘আজ আপনাদের এই এক বছরব্যাপী মৌলিক প্রশিক্ষণের শেষ দিন। আজ থেকে আপনারা সুপ্রশিক্ষিত এক ঝাঁক মেধাবী, চৌকস পুলিশ অফিসার হয়ে মাঠ পর্যায়ে সরাসরি আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায়, নাগরিকের সেবায় আত্মনিয়োগ করতে যাচ্ছেন, আপনাদের এই নতুন কর্মজীবনে স্বাগত জানাচ্ছি। আজকের এই সমাপনী অনুষ্ঠানের মাহেন্দ্রক্ষণে সুনিপুণ কুচকাওয়াজ উপহার দেওয়ায় আপনাদের অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। আপনাদের এক বছরব্যাপী এই কঠোর মৌলিক প্রশিক্ষণে যারা কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখেছেন তাদের সবাইকে অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। আপনাদের প্রশিক্ষণের সফল সমাপ্তি ও কর্মজীবনের নতুন প্রাঙ্গণে আপনাদের সকলের সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করছি। আজকের এই সমাপনী কুচকাওয়াজ অত্যন্ত মনোমুগ্ধকর ও দৃষ্টিনন্দন ছিল। আমি সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি।’
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘পুলিশকে মানবিক বাহিনী হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। কেউ যাতে হয়রানির শিকার না হন, সেটা খেয়াল রাখতে হবে। আপনারা জনগণের প্রত্যাশা পূরণে কাজ করবেন। জনসেবা ও কাজের মাধ্যমে নিজেদেরকে জনবান্ধব হিসেবে প্রমাণ করতে হবে, দায়িত্বশীল হতে হবে।’
বর্নাঢ্য এ প্যারেড অনুষ্ঠানে আইজিপি বাহারুল আলম, পুলিশ একাডেমির প্রিন্সিপ্যাল মাসুদুর রহমান ভূঞা, বগুড়া সেনানিবাসের ১১ পদাতিক ডিভিশন ও এরিয়া কমান্ডার মেজর জেনারেল এস এম আসাদুল হক, রাজশাহী মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ জাওয়াদুল হক, রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার খোন্দকার আজিম আহমেদ, পুলিশের অতিরিক্ত আইজি আবু নাছের মোহাম্মদ খালেদ, আরএমপি কমিশনার মোহাম্মদ আবু সুফিয়ানসহ বিভিন্ন উচ্চ পদস্থ সরকারি কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া আরও অনেক স্থানীয় সম্মানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
আপনার মন্তব্য প্রদান করুন...