রবিবার, ১৫ জুন ২০২৫, ০৫:১৮ পূর্বাহ্ন

গ্যাল জুলুম বন্ধ হোক- ফরিদ আহমেদ রবি

দেশজুড়ে সংবাদ ডেস্ক / ১২২ বার পঠিত
প্রকাশিত সময় : রবিবার, ১৫ জুন ২০২৫, ০৫:১৮ পূর্বাহ্ন
{"remix_data":[],"remix_entry_point":"challenges","source_tags":["local"],"origin":"unknown","total_draw_time":0,"total_draw_actions":0,"layers_used":0,"brushes_used":0,"photos_added":0,"total_editor_actions":{},"tools_used":{"border":1,"transform":1},"is_sticker":false,"edited_since_last_sticker_save":true,"containsFTESticker":false}

গ্যাস জুলুম বন্ধ হোক
ফরিদ আহমেদ রবি
নাগরিক অধিকার ক্ষুন্ন হলে প্রতিকারের দায়িত্ব রাস্ট্রের। একই ভাবে নাগরিক অধিকার নিশ্চিত করার দায়িত্বও রাস্ট্রের ওপর বর্তায়। নাগরিক অধিকার ক্ষুন্নের জন্য স্বয়ং রাস্ট্রযন্ত্র দায়ী হলে ভুক্তভোগী কোথায় যাবে? এমন প্রশ্নের উদ্রেক রাস্ট্র নিয়ণ্ত্রিত জ্বালানি গ্যাস সরবরাহ কর্তৃপক্ষের দায়িত্বহীন আচরণের কারণে! আবাসিক গ্রাহকদের কাছ থেকে মাসিক বিল আদায় করেও গ্যাস সরবরাহ সঠিক ভাবে না করায় তাদের বিরুদ্ধে নাগরিক অধিকার হরণ এবং গ্রাহক অত্যাচারের অভিযোগ আনা কি খুব অন্যায় হবে?গ্যাস স্বল্পতার কারনে গ্রাহক পর্যায়ে কম সরবরাহ কষ্ট হলেও মেনে নেয়া যায়।তাই বলে একেবারেই গ্যাস বিহীন অবস্থা কি মানার মত? তাও হয়তো কষ্টেসৃষ্টে মানা যেতো যদি গ্যাসপ্রাপ্তির আনুপাতিক হারে বিল পরিশোধের ব্যবস্থা করা হতো।সে গুড়ে বালি! গ্যাস থাক বা না থাক মাস শেষে নির্ধারিত হারে বিল ঠিকই দিতে হবে। গ্যাস বিহীন থেকেও যাদের পূরো বিল দিতে হচ্ছে তাদের ক্ষেত্রে এটিকে জুলুম ছাড়া আর কিইবা বলা যায়?এমন জুলুমের নেপথ্যে যদি থাকে খোদ রাস্ট্রিয় প্রতিষ্ঠান,তাহলে প্রতিকারের আশায় যাওয়ার জায়গা আর রইলো কোথায়? শিল্পঘণ নারায়ণগঞ্জের কিছু অঞ্চল কয়েক বছর যাবত একেবারেই গ্যাসবিহীন অবস্থায় কাটাচ্ছে। নিম্নবিত্ত শ্রেণীর অনেকেই রান্নার কাজ করতে না পেরে অনাহারে অর্ধাহারে দিন কাটাচ্ছে।কিছুটা স্বচ্ছল পরিবার অতিরিক্ত অর্থব্যয়ে বিকল্প পন্হায় রান্নার কাজ সারছে।কোন্ কোন্ অঞ্চল এমন অবস্থায় আছে তা নিশ্চয়ই কর্তৃপক্ষের অজানা থাকার কথা নয়! তা ছাড়া এ নিয়ে গ্যাস সংকটে থাকা অঞ্চল সমূহে প্রতিবাদ কর্মসূচি কম হয়নি, এখনও হচ্ছে।গ্যাস কর্তৃপক্ষের তাতে সামান্যই আসে যায়! সম্ভবতঃ তাদের জবাবদিহিতার কোন বালাই নেই। তাইতো কোন প্রতিকার হয়নি,কিছু হবে সে আশাও দেখা যাচ্ছে না! গ্যাস সরবরাহ সম্ভব না হলে সরকারি ভাবে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিলে সাধারণ গ্রাহক অন্ততঃ বিনা গ্যাসে বিল প্রদানের যণ্ত্রনা থেকে বেঁচে যেতো মর্মে অনেকর কন্ঠে আক্ষেপ ঝরে পড়ছে!প্রশ্ন আসতে পারে গ্রাহক নিজ থেকে কেন সংযোগ বিচ্ছিন্ন করছে না? উত্তরে বলা যায়, গ্যাস প্রাপ্তির আশায়! সবার একই রকম ভাবনা, “জনদরদী কোন কর্তৃপক্ষ হয়তো একসময় সমস্যার ন্যায় সংগত সমাধান দিবে”!বাংলাদেশে বিভিন্ন সীমাবদ্ধতার কারণে নাগরিকের অনেক মৌলিক চাহিদা বা অধিকার পুরোপুরি মেটানো সম্ভব হয় না।এসব সীমাবদ্ধতা সম্পর্কে সাধারণ মানুষ কমবেশি জানে বলে অনিচ্ছা সত্বেও মেনে নিতে বাধ্য হয়। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, আইন শৃঙ্খলার অবনতি দেখে দেখে ত্যাক্ত বিরক্ত হওয়া সত্ত্বেও সাধারণ মানুষ ভাল সময়ের অপেক্ষায় দিন গুনছে।
কিন্তু গাঁটের পয়সায় কেনা গ্যাস না পেয়ে তেমন অপেক্ষায় আর কত থাকা যায়?
দেশের অন্যান্য অঞ্চলে গ্যাস সরবরাহ কতটুকু স্বাভাবিক বা অস্বাভাবিক সেই প্রসঙ্গে না গিয়ে এ কথা নির্দ্বিধায় বলা যায় নারায়ণগঞ্জের অবস্থা সবচেয়ে শোচনীয়।অনেক অঞ্চলে আবাসিক গ্রাহকগণ স্বাভাবিক গ্যাস সরবরাহ থেকে বঞ্চিত।কিছু অঞ্চলে কয়েক বছর যাবৎ গ্যাস সরবরাহ নেই বললেই চলে।যেখানে কিছুটা আছে তাও টিমটিমে কুপির মত, কখনও আসে কখনও যায়।দুচারজন ভাগ্যবান গ্রাহক ছাড়া কেউই রান্নার কাজে গ্যাস ব্যবহার করতে পারছেনা।বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে এ বিষয়ে বিস্তর লেখালেখি হয়েছে, এখনও হচ্ছে। ফলাফল শূন্য।গ্রাহকের কাছ থেকে টাকা নিয়ে পণ্য সরবরাহ না করা শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলে আইনজীবীদের অভিমত।রাস্ট্র নিয়ণ্ত্রিত প্রতিষ্ঠান কি আইনের উর্ধ্বে? যদি তা না হয় তাহলে কোন প্রতিকার পাওয়া যাচ্ছে না কেন? তাদের কেন আইনের আওতায় আনা হচ্ছে না বা যাচ্ছে না?এমন হাজারো প্রশ্ন ভুক্তভোগী সকল গ্যাস গ্রাহকের।নাগরিক অধিকার রক্ষায় দেশে সরকারি বেসরকারি অনেক সংগঠন রয়েছে।যারা প্রতিনিয়ত বিভিন্ন ইস্যুতে আইন আদালতের দ্বারস্থ এবং সরকারের মুখোমুখি হচ্ছে।গ্যাস বঞ্চিতদের ক্ষেত্রে তাঁরা একেবারে নিশ্চুপ, কিন্তু কেন? তাঁরা কি গ্রাহকের সাথে এমন অন্যায় আচরণকে নাগরিক অধিকারের লংঘন বলে মনে করেন না? নাকি তাঁরা উচ্চবিত্ত,ভাগ্যবান শ্রেণীর অন্তর্ভুক্ত বলে সাধারণ মানুষের কষ্ট অনুভব করতে পারছেন না? গ্যাস সরবরাহ কর্তৃপক্ষের এমন আচরণকে অরাজকতা বা জুলুম ছাড়া আর কি বলা যায়?এমন জুলুম থেকে ভুক্তভোগী গ্রাহক শ্রেণীকে উদ্ধার করার মত কেউ কি নেই? এমন আর্তনাদ উচ্চবিত্ত শ্রেণীর নেই, থাকার কথাও নয়। দেশের অসংখ্য সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা করে বর্তমান দল নিরপেক্ষ সরকার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবেন এমনটিই ভুক্তভোগী মহলের প্রত্যাশা।অঞ্চল ভেদে গ্যাস সরবরাহ সীমিত বা অসম্ভব হলে বিলের ক্ষেত্রে সমন্বয় সাধন করা যেতে পারে যাতে করে কিছুটা হলেও ন্যায্যতা প্রতিষ্ঠিত হবে বলে বিশেষজ্ঞ মহলের অভিমত।গ্যাস সংকটে অতীষ্ঠ গ্রাহকদের স্বস্তি দিতে না পারলেও জুলুম থেকে রক্ষা করা সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের আশু কর্তব্য।সেই কর্তব্য পালন করে সংশ্লিষ্ট মহল দৃষ্টান্ত স্থাপন করবেন, বিবেকের কাছে স্বচ্ছ থাকবেন,অবসান হবে গ্যাস জুলুমের অধ্যায়,তেমন দিনের প্রত্যাশায় প্রহর গুনছে ভুক্তভোগী গ্রাহকগণ।তেমন দিন যত তাড়াতাড়ি আসবে ততই মঙ্গল।নয়তো গ্যাস গ্রাহকদের পুঞ্জীভূত ক্ষোভ দিন দিন বাড়তেই থাকবে,যার নেতিবাচক প্রভাব বা প্রকাশ কারও জন্য মঙ্গল বয়ে আনবে না। অতএব সাধু সাবধান!
লেখক: বহুজাতিক ওষুধ কোম্পানি ও পোশাক শিল্পের সাবেক শীর্ষ কর্মকর্তা

আপনার মন্তব্য প্রদান করুন...


এ ক্যাটাগরীর আরো খবর..